Breaking News:

Breaking News: USA Times Daily News is now live! | New top 10 bras for girls list published | Stay tuned for latest fashion tips | Website updates coming soon...

বাংলাদেশের উত্তরায় বিমান বিধ্বস্ত: মাইলস্টোন কলেজের সামনে উৎকণ্ঠিত অভিভাবকদের ভিড়

উত্তরায় বিমান বিধ্বস্ত: মাইলস্টোন কলেজের সামনে উৎকণ্ঠিত অভিভাবকদের ভিড়





বেলা তখন ১টা ১৫-এর আশপাশে। রাজধানীর উত্তরা দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দিনের ক্লাস শেষ। শিক্ষার্থীরা বের হওয়ার অপেক্ষায়। অনেকে বের হয়েও গেছে। স্কুলের হায়দার আলী ভবনেও একই অবস্থা। তবে কিছু শিক্ষার্থী শ্রেণিশিক্ষকের কাছে কোচিংয়ের জন্য অপেক্ষা করছিল। হঠাৎ বিকট শব্দ। কোনো কিছু বোঝার আগেই হায়দার আলী ভবনজুড়ে আগুন। চারদিকে চিৎকার চেঁচামেচি। পাশের চার, পাঁচ ও সাত নম্বর ভবনে কলেজের শিক্ষার্থীরাও শ্রেণিকক্ষে ছিল। তারা দৌড়ে এসে দেখছে হায়দার আলী দোতলা ভবনটি জ্বলছে। কিছু শিক্ষার্থী গায়ে আগুন নিয়ে বের হচ্ছে। কেউ কেউ ভবনের ভেতরে চিৎকার করছে। কিন্তু কেউ বের হতে পারছে না। তীব্র আগুনের জন্য কেউ তাদের উদ্ধারে এগিয়েও যেতে পারছে না




বিমানবাহিনীর বিমানটি মাইলস্টোন কলেজের হায়দার আলী ভবনের প্রধান ফটকে আছড়ে পড়ে এবং নিচতলায় ভবনটির এক পাশ দিয়ে প্রবেশ করে আরেক পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। সরেজমিনে দেখা গেছে, দোতলা হায়দার আলী ভবনটি পশ্চিমমুখী। ভবনটির মাঝখানে প্রধান ফটক এবং দোতলায় ওঠার সিঁড়ি। বিমানটি সোজা ফটকে আছড়ে পড়ে ভবনটিকে এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে যায়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও সেনাসদস্যরা বিভিন্ন যন্ত্র দিয়ে বিমানটির বিভিন্ন অংশ কেটে বের করছেন।




প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, ভবনটির প্রধান ফটকে সব সময় স্কুল স্টাফরা বসে থাকেন, সিঁড়ির নিচে স্টাফদের কক্ষ রয়েছে। বিমানটি প্রধান ফটক ভেঙে কক্ষের ভেতরে ঢুকে যায়। আগুনের তীব্রতায় পুরো ভবন কালচে হয়ে গেছে। ভবনের সামনের গাছগুলো পুড়ে গেছে, উদ্ধারকাজে অংশগ্রহণকারী কয়েকজন সেনাসদস্য আহতও হয়েছেন।


মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সায়েম আজকের পত্রিকাকে জানায়, সে বেলা ১টা ১০ মিনিটের পর বিকট শব্দ শুনতে পায়। এ সময় তারা কলেজটির চার নম্বর ভবনের একটি শ্রেণিকক্ষে ছিল। দৌড়ে এসে দেখতে পায়, হায়দার আলী ভবনে আগুন জ্বলছে।

এই শিক্ষার্থী বলে, বিমানটি ভবনের প্রধান ফটকের ভেতর ঢুকে যাওয়ায় ভেতরে থাকা শিক্ষার্থীরা (বেশির ভাগ) আর বের হতে পারেনি। কারণ, ভবনটির চারপাশে লোহার গ্রিল দিয়ে আটকানো। তাই নিচে যারা ছিল, তারা আর বের হতে পারেনি। ফায়ার সার্ভিস আসার পর আগুন নেভানোর পর গ্রিল কেটে ও ছাদে মই দিয়ে উঠে তাদের উদ্ধার করা হয়। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।


প্রত্যক্ষদর্শী আরেক শিক্ষার্থী ইমাম বলে, ভবনটিতে ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির ক্লাস নেওয়া হয়। স্কুল বেলা ১টার মধ্যে ছুটি হয়ে যায়। আজও ছুটি হয়েছিল। কিছু শিক্ষার্থী বের হয়ে গিয়েছিল, আর কিছু শিক্ষার্থী বের হওয়ার অপেক্ষায় ছিল। অনেকে আবার স্যারদের কাছে কোচিংয়ের জন্য অপেক্ষা করছিল। তখনই বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।


মাইলস্টোন স্কুলের মাঠে ও প্রধান ফটকের সামনে অসংখ্য অভিভাবক তাঁদের সন্তানদের খুঁজতে এসেছেন। সেখানেই দাঁড়িয়ে থাকা রিপন নামের এক ব্যক্তি এই প্রতিবেদককে জানান, তাঁর ভাগনে স্কুলটির ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী। ক্লাস শেষে তারা বের হওয়ার অপেক্ষায় ছিল—এমন সময় বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। তাঁর চোখমুখে ও গলার স্বরে উৎকণ্ঠার ছাপ স্পষ্ট।

লাকি আক্তার নামের এক নারী জানালেন, তাঁর দুই সন্তান মাইলস্টোনে পড়ে। বড় ছেলে বের হয়ে আসতে পারলেও তাঁর ছোট ছেলে এখনো নিখোঁজ। ফেরদৌসী বেগম নামের এক নারী জানান, তিনি তাঁর মেয়েকে খুঁজে পাচ্ছেন না। তাঁরা এতটাই উৎকণ্ঠিত যে, তাঁদের মুখ দিয়ে কথাই বের হচ্ছে না। অশ্রুসজল চোখে তাঁরা অপেক্ষা করছেন, কখন তাঁদের নাড়িছেঁড়া ধন তাঁদের বুকে ফিরে আসবে।


এদিকে মাইলস্টোন কলেজের বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছে ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, বিজিবি, রেড ক্রিসেন্ট, উত্তরার বিভিন্ন থানা-পুলিশ এবং স্বেচ্ছাসেবীরাও কাজ করছেন।


আহত ব্যক্তিদের রাজধানীর চারটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে কুর্মিটোলা জেনারেল হসপিটাল, জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউট, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সিএমএইচ। সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিস নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে এই চার হাসপাতালে খবর নিতে বলেছে অভিভাবকদের।


সূত্র: আজকের পত্রিকা

Post a Comment

0 Comments